হযরত ঈসা (আ.)-এর দুনিয়াতে পুনরাগমন ও ইমাম মাহদি (আ.)-এর আগমনে বিশ্বাস ইসলামি আকিদার একটি দিক। কিয়ামতের ১০টি বড় আলামতের অন্যতম হলো ঈসা (আ.) ও ইমাম মাহদি (আ.)-এর আগমন আখেরি যামানায় ইমাম মাহদি (আ.) এর আত্মপ্রকাশ কিয়ামতের সর্বপ্রথম বড় আলামত। ইমাম মাহদি (আ.) এবং ঈসা (আ.) সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি ও রাসুল হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর আনীত দ্বীন ইসলামের অনুসারী হবেন।
ইমাম মাহদির পরিচয়
ইমাম মাহদির প্রকৃত নাম হবে মুহাম্মাদ এবং পিতার নাম হবে আবদুল্লাহ। তিনি ইমাম হাসান (রা.)-এর বংশধর হবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'মাহদি আসবেন আমার বংশধর হতে। তাঁর কপাল হবে উজ্জ্বল এবং নাক হবে উন্নত। তিনি পৃথিবীকে ন্যায়বিচার ও ইনসাফ দিয়ে পূর্ণ করে দিবেন, যেভাবে পৃথিবী যুলুম-নির্যাতনে পূর্ণ হয়েছিল।' (আবু দাউদ)
ইমাম মাহদি (জা.)-এর আগমন
কিয়ামতের পূর্বে পৃথিবী যখন যুলুম-নির্যাতন, যুদ্ধ-বিগ্রহ, দুর্নীতি, হিংসা ও হানাহানিতে ভরে যাবে, ব্যক্তিগত ও সামাজিক সকল ক্ষেত্রে মানুষের নৈতিক অবক্ষয় চরম পর্যায়ে চলে যাবে, তখন শুধু মুসলমানরাই নয়, বিশ্বের সকল নিপীড়িত ও অধিকার বঞ্চিত জাতি একজন ত্রাণকর্তার আগমন কামনা করবেন। যিনি তাদেরকে অন্যায়-অবিচারের অন্ধকার থেকে মহামুক্তির আলোর দিকে পথ দেখাবেন। তখন উম্মতে মুহাম্মাদির মাঝে একজন ব্যক্তি আগমন করবেন। তিনি রমযান মাসে কাবা ঘর তাওয়াফ অবস্থায় প্রকাশ পাবেন। কাবা চত্বরে মুসলমানগণ তাঁর হাতে বায়আত গ্রহণ করবেন। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'যে বছর রমযান মাসের প্রথম দিকে সূর্যগ্রহণ এবং রমযান মাসের শেষের দিকে চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা ঘটবে, সেই বছরই ইমাম মাহদি'র আবির্ভাব হবে'। তিনি শেষ নবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর উম্মাত হিসেবে এ দুনিয়াতে আসবেন। তিনি উম্মাতে মুহাম্মাদির নেতৃত্ব গ্রহণ করবেন। ইসলাম ধর্মকে সংস্কার করবেন। ইসলামি শরিয়তের মাধ্যমে বিচার-ফয়সালা করবেন। পৃথিবী হতে যুলুম-নির্যাতন দূর করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করবেন।
ঈসা (আ.)- এর আগমন
ইমাম মাহদি (আ.)- এর আবির্ভাবের সাত বছরের মধ্যে দাজ্জালের আবির্ভাব হবে। দাজ্জাল ও তার বাহিনী মুসলমানদের উপরে অসহনীয় অত্যাচার ও নির্যাতন করতে থাকবে। একদিন দু'জন ফেরেশতার কাঁধে ভর করে ঈসা (আ.) দামেস্কের একটি মসজিদে অবতরণ করবেন। তিনি উম্মাতে মুহাম্মাদি হিসেবে দুনিয়াতে আসবেন। নেমে এসে তিনি ইমাম মাহদি (আ.) এর সাথে মুসাফাহা করবেন। এরপর ইমাম মাহদির পিছনে মুক্তাদি হয়ে আসরের সালাত আদায় করবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'সেদিন তোমাদের অবস্থা কেমন হবে, যেদিন তোমাদের মধ্যে ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ.) অবতরণ করবেন এবং তোমাদেরই মধ্য হতে একজন তোমাদের ইমাম হবেন।' (বুখারি)
Read more